দেশে সব মানুষ সমান সুযোগ নিয়ে চলবে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ, এখানে সব ধর্মের মানুষের সমান সুযোগ রয়েছে। এদেশের মানুষ আর কখনো কারো কাছে মাথা নত করবে না, বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে। এসময় যেকোনো পরিস্থিতি সহনশীলভাবে মোকাবিলারও আহ্বান জানান তিনি।

গতকাল বুধবার বিকেলে বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে যে শিশুটি জন্ম নিবে তার সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণে নানা পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার। যেকোনো পরিস্থিতি সহনশীলতার সাথে মোকাবিলা করতে হবে। এ মাটিতে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব ধর্মের মানুষ রয়েছে। আমরা মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে অন্য ধর্মাবলম্বীদের অবহেলার চোখে দেখব তা নয়। মনে রাখতে হবে সবাই এক হয়ে মুক্তিযুদ্ধে একই সঙ্গে রক্ত ঢেলে দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে। কাজেই এদেশের মাটিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার নিয়ে বাস করবে। সবার ধর্ম পালনের স্বাধীনতা থাকবে। সেই চেতনায় আমরা বিশ্বাস করি। ইসলাম আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়ে থাকে। নবী করিম (সা.) আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়েছেন। কে কী বলল তা না শুনে, আমরা দেশের জন্য কতটুকু করলাম সেটা চিন্তায় থাকবে। তাহলে আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারব ও সঠিক কাজ করতে পারব।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরে বলেন, ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর মানুষ উপলব্ধি করল সরকার জনগণের সেবক হতে পারে, জনগণের জন্য কাজ করতে পারে। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা আবার সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখি। আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে কেন এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছে এর ব্যাখ্যা দিয়ে দলটির সভাপতি বলেন, জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারছি বলেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ভিক্ষুক জাতি হিসেবে আমরা থাকতে চাই না। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হবে। এখন ৯৯ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে, মুজিববর্ষেই দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাবে। জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিল আমরা সেই স্বপ্ন পূরণ করব। জাতির পিতার আদর্শ অনুযায়ী আমরা দেশ চালাব। এই দেশের মানুষ আর কখনও মাথা নত করে চলবে না। মাথা উঁচু করে চলবে।

নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের সেবাই আওয়ামী লীগের কাজ। করোনাকালেও আমাদের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আমাদের অনেক নেতাকর্মী মারাও গেছেন। এ সময় তিনি মারা যাওয়া নেতাকর্মীদের আত্মার শান্তি কামনা করেন।

সভাপতি বলেন, সংগঠনটাকে শক্তিশালী করতে হবে। পঁচাত্তরের পর যে নামটি মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল, আজ আপনারা জানেন ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর নামে পুরস্কার ঘোষণা করেছে। মুজিববর্ষে এটা বাঙালি জাতির জন্য বড় উপহার।

করোনা নামক বন্দিত্ব থেকে বিশ্ববাসী মুক্তি পাবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশেও ভ্যাকসিন আসার ব্যবস্থা হয়েছে। ইতোমধ্যে চুক্তি হয়ে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনও হয়েছে। তারপরও সবচেয়ে বড় সুরক্ষা মাস্ক, হাত ধোয়া, দূরত্ব বজায় রাখা। ঘোরাঘুরি কম করা। আপনারা সবাই স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে চলবেন। আপনাদের সুস্থ থাকা সংগঠন ও দেশের মানুষের জন্য জরুরি।

আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, হাছান মাহমুদ, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহাম্মদ মন্নাফি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর